ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক : চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (WTO) ভারতের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করেছে।
অভিযোগে চীন দাবি করেছে, ভারতের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) পণ্যের ওপর যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এবং সৌরশক্তি (ফটোভোলটাইক) খাতে দেওয়া কিছু প্রণোদনা-সাবসিডি WTO নিয়ম ভঙ্গ করছে — বিশেষত ‘ন্যাশনাল ট্রিটমেন্ট’ ও ‘ইম্পোর্ট-সাবস্টিটিউশন সাবসিডি’ সংক্রান্ত বিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে বলা হয়েছে।
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ বুধবার, এই অভিযোগ চীনের মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে প্রকাশ করা হয়।
বেইজিং ধারাবাহিক সম্পর্কযুক্ত একাধিক ঘটনার বিবৃতি দিয়েছে যে, ভারতের শুল্ক ও সৌরখাতে দেওয়া প্রণোদনগুলো ভারতীয় নির্মাতাদের অনুচিত সুবিধা দিচ্ছে এবং এতে চীনের রপ্তানি- এবং বিনির্মাণ শিল্পের স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে। চীন জোর দিয়ে বলেছে এসব ব্যবস্থা WTO-এর বিধি (যেমন GATT ও SCM চুক্তি) লঙ্ঘন করে এবং দ্রুত সেগুলো সংশোধনের জন্য বিবরণ চায়।
WTO প্রক্রিয়া: চীনের এই নোটিশ দ্বারা কনসালটেশন প্রক্রিয়া শুরু হয় — প্রথম ধাপ হিসেবে দুই পক্ষ ঐক্যমত প্রতিষ্ঠার জন্য ৬০ দিনের মধ্যে আলোচনা চালাতে পারে। যদি ঐ সময়ের মধ্যে সমাধান না হয়, তখন মামলাটি WTO-এর বিতর্ক নিরসন ইউনিটে (Dispute Settlement Body) এগোতে পারে, যেখানে বিশ্লেষণ-শুনানি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যায় শুরু হবে। অতিরিক্তভাবে, এ বছরের আগে থেকেই চীন ওই একই পোশাকে (এখন-এবং অক্টোবরেও) ভারতের বিভিন্ন সাবসিডি-নীতি নিয়ে অভিযোগ তুলেছে — ফলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যবোধে চাপ বাড়ছে।
যদি WTO আদালত চীনের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়, তবে ভারতের নির্দিষ্ট শুল্ক/সাবসিডি পরিবর্তন বা প্রত্যাহার করতে হতে পারে; অন্যথায় প্রতিপক্ষকে ক্ষতিপূরণ বা বৈষম্যমূলকভাবে একে অপরের পণ্যের উপর পাল্টা কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। এ ধরনের কেস দরদামী প্রযুক্তি ও সৌরখাতের সরবরাহ-শৃঙ্খলায় অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে এবং ভারত-চীন বাণিজ্যে নিষ্পত্তি না হলে স্থানীয় উৎপাদন নীতিতে সমন্বয় বাধ্যতামূলক হতে পারে।
ভারতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া, সাধারনতই নীতিগতভাবে দেশগুলো WTO-এর কনসালটেশন পর্যায়ে নিজেদের আইন-প্রকল্প ও নীতি ব্যাখ্যা করে; ভারতও সমাধান-চেষ্টা করবে কিংবা প্রয়োজনে প্রতিরোধী যুক্তি উপস্থাপন করবে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে সংবেদনশীল এসব সিদ্ধান্ত স্থানীয় শিল্প-প্রশ্রয়, রপ্তানি-কেন্দ্রিক নীতি ও ভূরাজনৈতিক কূটনীতির অংশও হয়ে দাঁড়ায় — সেই কারণে কংক্রিট আইনি উপসিদ্ধান্ত ছাড়া রাজনৈতিক মীমাংসাও ঘটতে পারে।
চলতি বছরের মধ্যে এটি চীন-ভারত বিবাদের আরেক দফা; অক্টোবর-এ একটি পৃথক কেসে চীন ইতোমধ্যেই ভারতের ইলেকট্রিক ভেহিকেল (EV) ও ব্যাটারি আর্থিক সহায়তা নিয়ে অভিযোগ নথিভুক্ত করেছিল। পুনরাবৃত্ত অভিযোগ দুই দেশের বাণিজ্য-আচরণে বাড়তি চাপ ও WTO-ভিত্তিক সমাধানের গুরুত্বকে তুলেছে। আগামী ৬০ দিনে কনসালটেশন কিভাবে এগোবে সেটাই এই বিতর্কে মূল মোড় নির্ধারণ করবে।
0 Comments